গতকাল পর্যন্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী কিংবা আইনমন্ত্রী কেউই বলেননি যে বিএনপি কিংবা পরিবারের পক্ষ থেকে লিখিত কোন আবেদন পেয়েছেন।
ওবায়দুল কাদের বলেন,ফখরুল সাহেব আমাকে ফোনে খালেদা জিয়ার মুক্তির বিষয়ে আলোচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাদের এই আবেদনটা জানাতে বলেছেন মৌখিকভাবে। আমি সেটা প্রধানমন্ত্রীকে জানিয়েছি।
আমি এটুকু বলতে পারি,এছাড়া কোনো লেনদেন বা এ নিয়ে কোনো কথাবার্তা এসব আমাদের সাথে হয়নি। তলে তলে আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে গেছে, কালকে টক শোতে শুনলাম, আমার মনে হয় বাস্তবে বিষয়টা তেমন কিছু নয়।
খালেদার মামলাটি রাজনৈতিক উল্লেখ করে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমি আগে থেকেই বলে আসছি, বেগম জিয়ার এই মামলাটি রাজনৈতিক মামলা নয়। সরকারের বিবেচনার বিষয়টা তখনই আসে, যখন বিষয়টি রাজনৈতিক বিবেচনার হয়। বেগম জিয়ার এই মামলাটি হচ্ছে দুর্নীতির। এটা কোনো রাজনৈতিক মামলা নয়। রাজনৈতিক মামলা হলে সরকারের পক্ষে বিবেচনার বিষয় ছিল।
দুর্নীতি মামলা এখন সম্পূর্ণভাবে আদালতের এখতিয়ার। সেতুমন্ত্রী আরও বলেন,খালেদা জিয়ার প্যারোলের বিষয়টি তারা আবেদন করতে পারেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে।
তবে প্যারোল কি কি কারণে দেয়া যায় এবং দোষী বন্দিকে প্যারোলে মুক্তি দেওয়া যায় কিনা, আর তারা কি কি কারণে প্যারোলে মুক্তি চান সে বিষয়টা উল্লেখ করে তারা লিখিতভাবে কোনো আবেদন এখনও করেননি। খালেদা জিয়ার দল কিংবা পরিবার যদি আবেদন করেন তবে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন,যদিটা পরে দেখা যাবে।
আমাদের বক্তব্য হচ্ছে প্যারোলের আবেদনের সঙ্গে বিষয়টার মিল আছে কিনা, এটা খতিয়ে দেখা। তাদের আবেদন খালেদা জিয়াকে প্যারেলে মুক্তি দেয়ার জন্য যুক্তিযুক্ত কিনা, এ বিষয়টা অবশ্যই দেখা হবে। যেহেতু খালেদা জিয়াকে আদালত দোষী করেছে, কাজেই মেডিকেল বোর্ডের রিপোর্টটা আদালতের কাছেই যেতে হবে।
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে সাংবাদিকদের করা এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন,খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে অমানবিক কোন কিছু সরকার করতে পারে না। তাকে যথাযথ চিকিৎসার ব্যবস্থা করা সরকার অবশ্যই বিষয়টি মাথায় রাখে।
তবে একটা বিষয় হচ্ছে তার শারীরিক অবস্থার বিষয়টা তার দলের লোকেরা যেভাবে বলেন, চিকিৎসকরা কিন্তু সেভাবে বলছেন না।
চিকিৎসকরা চিকিৎসার ব্যপারে রিপোর্ট দেবেন দলের লোকদের রিপোর্টের ওপর চিকিৎসার বিষয়টি বিবেচনা করা হবে?’ বিএনপির ক্ষমতাশীন দলের সাধারণ সম্পাদককে ফোন করা ও সরকারকে আন্দোলনের হুমকি বিষয়ে আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেছেনন, এটা বিএনপির দ্বিচারিতা।
মন্ত্রিপরিষদের রদবদল নিয়ে করা এক প্রশ্নের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন,মন্ত্রিপরিষদের সকল বিষয় প্রধানমন্ত্রীর এখতিয়ার। প্রধানমন্ত্রী সরকারের মধ্যে কাজের সুবিধার জন্য সময়ে সময়ে মন্ত্রিসভায় রদবদল করতে পারেন,কারও দায়িত্বের পরিবর্তন ঘটাতে পারেন। তারা কেউ তো বাদ যায়নি।
আগামীকাল দলের মনোনয়ন বোর্ডের সভা নিয়ে এক প্রশ্নের জবাবে কাদের বলেন, দলের সংসদীয় বোর্ড আছে, স্থানীয় সরকার বোর্ড আছে। দুটি বোর্ডেরই যৌথসভা হবে। আগামীকাল ১৯ জনের যৌথসভা হবে। এই সভায় আমাদের কাছে কিছু রিপোর্ট আছে, নেত্রীর কাছে কিছু তার নিজস্ব ওয়েতেও তিনি খোঁজ খবর নিয়েছেন। গোয়েন্দা রিপোর্ট আছে, তাছাড়া সংসদীয় ও স্থানীয় সরকার বোর্ড প্রত্যেক প্রার্থীকে নিয়ে চুলচেড়া বিশ্লেষণ করবেন।
সংবাদ সম্মেলনে দলের অন্যান্যদের মধ্যে এসময় উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদ আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম,সাংগঠনিক সম্পাদক এস এম কামাল হোসেন,প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক ড. আবদুস সোবাহান গোলাপ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক প্রকৌশলী আব্দুস সবুর, দপ্তর সম্পাদক বিপ্লব বড়ুয়া, উপ দপ্তর সম্পাদক সায়েম খান, কেন্দ্রীয় সদস্য আনোয়ার হোসেন প্রমুখ।