নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
রাজশাহীঃ রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাটে নৌকার পথসভায় দুর্বিত্তদের বোমা হামলার ঘটনা ঘটেছে। পরপর তিনটি বোম বিস্ফোরণের বিকট শব্দে আতঙ্কিত হয়ে প্রায় অর্ধশত মহিলা পায়ে পিষ্ট হয়ে আহত হয়েছেন। আরও পাঁচ জন্য আহত অবস্থায় মোহনপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
মঙ্গলবার (২৬ জানুয়ারী) রাত সাড়ে ৮ টায় পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের হরিদাগাছি গ্রামে নৌকার প্রার্থী শহিদুজ্জামান শহিদ এর নির্বাচনী পথসভায় হটাৎ দুর্বিত্তদের ছোড়া ৩টি হাতবোমা বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় মঞ্চে পথসভার প্রধান অতিথি এডভোকেট আব্দুস সালাম বক্তব্য দিচ্ছিলেন। আর সামনে সারিবদ্ধ লাইনে চেয়ারে বসে বক্তব্য শুনছিলেন প্রায় সাত শতাধিক মহিলা ভোটার। এতে উপস্থিত নেতাকর্মীরা ও সাংবাদিকরাও আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে দিক বিদিক ছুটাছুটি শুরু করে।
এসময় দুর্বিত্তের ছোড়া হাতবোমায় পাঁচজন আহত হয়েছেন। তারা সকলেই মোহনপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছেন। আহতরা হলেন, তিলাহারী গ্রামের ইব্রাহীমের ছেলে সোহেল রানা (৩৩), রায়ঘাটি গ্রামের মৃত সৈয়দ আলীর ছেলে শফিকুল ইসলাম (৪০), কেশরহাট এলাকার মুকুল গাইনের ছেলে কাজল হোসেন রকি (২৫), বাকসৈল গ্রামের মিজানুল রহমান মিজান (২৫) ও ফুলশো গ্রামের সামসুল ইসলামের ছেলে আরমান হোসেন সবুজ (২৫)।
আহতদের মধ্যে কাজল হোসেন রকির দুই গাল পুড়ে গেছে। মিজানুল রহমান মিজানের ডান পায়ে জখম, শফিকুল ইসলাম কানে শুনতে পাচ্ছেন না। এছাড়াও সোহেল রানার পায়ে মারাত্মক জখম হয়েছে। প্রত্যেকের প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়া হয়েছে।
সরেজমিনে, সন্ধা সাড়ে সাতটায় নৌকার পথসভায় শুরু হয়। একে একে মঞ্চে আগত অতিথিরা বক্তব্য দিতে থাকেন। পর্যায়ক্রমে বক্তব্য দেন নৌকার প্রার্থী শহিদুজ্জামান শহিদ। এর পরে বক্তব্য দিতে শুরু করেন পথসভার প্রধান অতিথি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এডভোকেট আব্দুস সালাম। বক্তব্যের ঠিক ৫ মিনিট যেতেই হটাৎ মঞ্চের সামনে পর পর ৩ টি বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। এসময় মঞ্চের সামনে ধোঁয়ায় আচ্ছন্ন হয়ে পরে। মঞ্চে উপস্থিত নেতাকর্মীরা দিক বিদিক ছুটাছুটি শুরু করে। কয়েকজন নেতাকর্মী প্রধান অতিথি ও নৌকার প্রার্থীকে নিরাপত্তা দিতে চারিদিক থেকে ঘিরে রাখেন।
তখন পরিস্থিতি ঠিক ২১ শে আগস্ট প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার জনসভায় গ্রেনেড হামলার চিত্ত ভেসে উঠে। পাশে রাখা উপজেলা পরিষদের গাড়ি নিয়ে হাজির ড্রাইভার বুলেট। আতঙ্কগ্রস্ত উপজেলা চেয়ারম্যানকে নিরাপদে গাড়িতে তুলেই ড্রাইভার গাড়ি চালিয়ে স্থান ত্যাগ করেন। ততক্ষণে জয় বাংলা শ্লোগান দিতে থাকেন নেতাকর্মীরা।
এর পরে নৌকার সমর্থকেরা কেশরহাট বাজারে ধানের শীষের প্রধান অফিস ভাংচুর করে বাজারে মিছিল শুরু করে। পরে মোহনপুর থানা পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। বর্তমানের এ খবর লিখা পর্যন্ত মঞ্চে উপস্থিত নেতারা নিরাপদ আছেন। আর সামনে উপস্থিত মহিলা সমর্থকের অনেকে পায়ে পিষ্ট হয়ে আহত হয়েছেন। তাদেরকে নিজ নিজ বাসায় প্রাথমিক চিকিৎসা সেয়া হচ্ছে বলে জানা গেছে।
তবে কে বা কারা বোমা হামলা করেছে তা এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।
এব্যাপারে মোহনপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) তৌহিদুর রহমান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। আর এই বোমা হামলার সাথে কারা জড়িত তা খুজে বের করে আইনের আওতায় আনা হবে বলে সময় সংবাদ বিডিকে জানান।
Leave a Reply